বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের তুমব্রু জিরো পয়েন্টের অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দারা মর্টারশেল হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণে ব্যানার পেস্টুন নিয়ে মর্টারশেল হামলায় রোহিঙ্গা কিশোর ইকবাল হত্যার প্রতিবাদ জানানো হয়।
এসময় বক্তব্যে রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, শুরুর দিকে মিয়ানমার নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) গোলাগুলি-সংঘর্ষ শুরু হলেও এখন তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী পুলিশ (বিজিপি) গোলাগুলি করে পরিস্থিতি অশান্ত করছে।
এই অবস্থায় আতংকে দিন কাটাতে হচ্ছে ৬২১ টি পরিবারের চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে, যারা গত পাঁচ বছর ধরে সেখানে বসবাস করছে।
সমাবেশের বক্তব্যে রোহিঙ্গা নেতা আব্দুর রহিম বলেন, ” গত শুক্রবার রাতে শূন্যরেখায় পরিকল্পিতভাবে মর্টারশেল হামলা চালিয়েছে মিয়ানমারের মিলিটারিরা। তারা চায় আমরা এখান থেকে সরে যাই, আমরা যাবো না। ”
যদি যেতেই হয় শুন্য রেখার রোহিঙ্গারা হেটে পাহাড়ের অপর প্রান্তে রাখাইনে নিজেদের ভিটায় ফিরবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সমাবেশে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘকে আহবান জানিয়ে লেখা চিঠি পাঠ করেন শুন্য রেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মুখপাত্র দিল মোহাম্মদ।
দিল মোহাম্মদ চিঠি প্রসঙ্গে টিটিএনকে বলেন, ” ২০১৭ সালে সামরিক জান্তা আট লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত করেছে। আমরা চিঠিতে জাতিসংঘকে জানিয়েছি সামরিক জান্তা বাহিনী যেকোনো মূহুর্তে আমাদের উপর আরো বড় আক্রমণ করতে পারে।”
চিঠিতে এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় জাতিসংঘকে শূন্য রেখার আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান করা হয়েছে বলে জানান দিল মোহাম্মদ।
এই চিঠি জাতিসংঘ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত জুলাই থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সেদেশের বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্যে চলা সংঘাতে অস্থির হয়ে উঠেছে রাখাইন রাজ্য।
সংঘাতের প্রভাবে আতংক ছড়িয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত অঞ্চলে, তিন দফায় মায়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা মর্টার শেল পতিত হয়েছে ঘুমধুমে।
সর্বশেষ, এক রোহিঙ্গা নিহত ও ৬ জন আহত হওয়ার ঘটনা উৎকন্ঠা বেড়েছে সীমান্ত এলাকায়।
পাঠকের মতামত